করোনা মহামারিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে বিপাকে রয়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। প্রতি সপ্তাহে উঠানামা করছে এসব পণ্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মাংসের দাম।তবে কাঁচাবাজারে স্বস্তি ফিরেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে, ক্রেতারা বলছেন, করোনার লকডাউনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের দৈনিক যা রোজগার হচ্ছে, সে তুলনায় কাঁচাবাজারের দাম বেশিই।
গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১২০ টাকা। এ সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। দেশি মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ৪৭০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা। আবার গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা। তবে, স্থিতিশীল রয়েছে খাসির মাংসের দাম।শনিবার (১ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর মেছুয়া বাজারে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।ময়মনসিংহ নগরীর প্রধান কাঁচাবাজার মেছুয়াবাজারের মুরগি বিক্রেতা রিপন বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় ফার্মের মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আমদানি না থাকায় দেশি মুরগির দাম বেড়ে প্রায় গরুর মাংসের সমান হয়েছে।
তিনি জানান, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৪০ থেকে ২৩০ টাকা, সাদা কক ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এদিকে একই বাজারের খাসি ও গরুর মাংস বিক্রেতা ফিরোজ দাবি করেন, রোজায় মাংসের দাম কিছুটা বেশি থাকলেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই আছে। তিনি বলেন, খাসির মাংস ৭৮০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজি, গরুর মাংস ৫৫০ থেকে টাকা ৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
এদিকে দেশি মুরগির ডিম ৫০ টাকা হালি, ফার্মের মুরগির ডিম ২৮ টাকা হালি ও হাঁসের ডিম ৩৫ হালি বিক্রি হচ্ছে।মেছুয়াবাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা হযরত আলী বলেন, গত ১৫ দিনের তুলনায় কাঁচামালের দাম যথেষ্ঠ কমেছে। তবে, এসব পণ্যের দাম আমদানির ওপর নির্ভরশীল বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমদানি থাকলে দাম কমে, আবার আমদানি কমে গেলে দাম বেড়ে যায়।পটল ৪০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, করলা ৩৫, গাজর ৩০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩৫ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন এই বিক্রেতা।মেছুয়াবাজারে বাঁধাকপি ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, সজিনার ডাটা ৮০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, লাউ ১৫ টাকা, আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৪ টাকা, রসুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, আদা ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা ও শুকনা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
মাসকলাই ডাল ১২০ টাকা, মটর ডাল ১০০ টাকা, অ্যাংকার ডাল ৪২ টাকা, মুগ ডাল ১৩০ টাকা, মসুর ডাল (বড়) ৭০ টাকা কেজি, মসুর ডাল (ছোট) ১১০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা, মুড়ি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, চিনি ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন রিপন স্টোরের বিক্রেতা রিপন।মাছের দামে তেমন ওঠানামা নেই। তবে, আমদানি কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১১০ টাকা, রুইমাছ বড় ২২০ ও ছোট ২০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, রাজপুঁটি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কই মাছ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, শিংমাছ ৩০০ টাকা, মাগুর ৩০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০ টাকা এবং ইলিশ (এক কেজি ওজনের) ৮০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
তেল বিক্রেতা কাঞ্চন পাল জানান, এ বছর ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা বেশি। তবে ঈদের আগে তেলের কমতে পারে। তিনি সয়াবিন তেল ১৩০ টাকা থেকে ১৩২ টাকা কেজি, পামওয়েল তেল ১১৭ টাকা, কোয়ালিটি তেল ১২২ থেকে ১২৪ টাকা, সরিষার তেল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, নারিকেল তেল কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা বিক্রি করছেন।মেছুয়া বাজারের হেজবুল্লাহ রোডের মা ফিরোজা খাদ্য ভান্ডারের মালিক আব্দুল লতিফ জানালেন, চিনিগুঁড়া চাল শেরপুর ৬৮ টাকা ও দিনাজপুর ১০০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬৪ টাকা, ঊনত্রিশ চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, আঠাশ চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা ও মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নতুন চাল আসলে দাম কিছু কমবে বলে জানালেন অর্পা খাদ্য ভান্ডারের মালিক ভজন সাহা। তিনি বলেন, বাজারে নতুন আঠাশ চাল চলে এসেছে, ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন আঠাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।