বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির নির্বাচনের সংশোধিত ফলাফল বুঝে নিয়েছেন সভাপতি পদে পরাজিতপ্রার্থীওমর সানি। মঙ্গলবার রাতে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে নতুন ফলাফল সানির হাতে তুলে দেয়া হয়।এরআগে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংশোধিত ফল প্রকাশ করেন নির্বাচনবোর্ডের আপিল বিভাগ। এ সময় আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন দিলু, সদস্য খোরশেদ আলম খসরু ও শামসুল হক উপস্থিত ছিলেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেরিয়ে পড়ার সময় কান্নার শব্দ শোনা যায়। সহশিল্পীরা শুরুতে ওমর সানীকে ঘিরে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। সবাইকে নিজের মতো করে সান্ত্বনা দিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যান সানী। এরপর কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য মৌসুমী বের হলে তাকেও ঘিরে ধরেন অনেক সহশিল্পী। গতকাল রাতে এভাবেই সানী-মৌসুমীকে এফডিসি থেকে বিদায় জানায় সহশিল্পীদের একটা অংশ।
মৌসুমী ও ওমর সানীকে জড়িয়ে ধরে যাদের সবচেয়ে বেশি কাঁদতে দেখা গেছে, তাদের মধ্য আছেন কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত কমল ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য জেসমিন। তাদের দাবি, সভাপতি পদে ওমর সানীকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। শিল্পীদের কাছে তিনি যতটা জনপ্রিয়, তার হারার কোনো কথা না। মৌসুমী-ওমর সানী দম্পতি তাদের সবাইকে বুকে টেনে সান্ত্বনা দেন। মন দিয়ে সবাইকে কাজ করে যেতে বলেন।
মৌসুমী বলেন, আমি আসলে ওদের এমন আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ দেখে কী বলব বুঝতে পারছি না। এটাই আসলে আমাদের শিল্পীসমাজ। এমন একটা পরিবেশ-পরিস্থিতি আজ তৈরি হবে, এটা বুঝতে পারিনি। সব শিল্পীকে ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি।
সহশিল্পীদের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পেয়ে ওমর সানীও চোখের পানি আটকাতে পারেননি। তিনি বলেন, এখনো কেউ মানতেই চায় না আমি হেরেছি। তারা হাউমাউ করে কান্নাকাটি করছে। শিল্পীরা আমাকে যে এভাবে ভালোবেসেছে, এটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় বিজয়। আমি শুধু এটুকু বলব, আমার পুরো অভিনয়জীবনে এমন নির্বাচন দেখিনি।
গত রোববার নির্বাচনের ফলাফলে অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানিয়ে আপিল বোর্ডের কাছে লিখিত আবেদন করেন ওমর সানি। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে গত সোমবার দুপুর থেকে পুনরায় ভোট গণনা করা হয়। নতুন ফলাফলে সভাপতি পদে ওমর সানির ৯ ভোট বাড়লেও জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে মিশা সওদাগরকেই। কেননা, মিশা ও সানির জয়-পরাজয়ে ভোটের ব্যবধান ব্যাপক।
এ সময় নির্বাচনের আপিল বোর্ডের সদস্য খোরশেদ আলম খসরু নতুন ফল পড়ে শোনান। তিনি বলেন, দুঃখ প্রকাশ করে বলছি, প্রাথমিকভাবে ফল প্রকাশে কিছু অসঙ্গতি ছিলো। সভাপতি পদপ্রার্থী ওমর সানির আবেদনের প্রেক্ষিতে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। নতুন করে ভোট গণনায় সানির ৯টি ভোট বেড়েছে। ৯টি ভোট গণনায় ভুল ছিলো। আর দুটা ডামি ভোটসহ ৪টি বাতিল ভোট বেড়েছে। এখন বাতিল ভোট বেড়ে হয়েছে ৯৩টি।
তিনি বলেন, পুনরায় ভোট গণনায় কার্যকরী সদস্য পদে নানাশাহের ভোট বেড়েছে ১টি। তার ভোট সংখ্যা ২৫২টি। আর বিজয়ী সুশান্তের ১১৭ ভোট কমে যাওয়ায় তিনি ২২৫ ভোট নিয়ে হেরে গেলেন নানাশাহের কাছে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনতাজুর রহমান আকবর বলেন, নতুন করে ফলাফলে আরও কিছু পরিবর্তন এসেছে। ফেরদৌস, আকতার ও যুবরাজের ভোট বেড়েছে। আলীরাজের ভোট কমেছে ১০টি। আগামী ১১ তারিখ চূরান্ত ফলাফল নোটিশ বোর্ডে টানানো হবে বলে জানান তিনি।